দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যাওয়ার কারণে দিন দিন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের পরিধি বেড়েই চলেছে। তাই নতুন ডিভাইস কেনার পাশাপাশি পুরাতন বা সেকেন্ড হ্যান্ড ডিভাইস কেনার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
দেশের মানুষদের সাধ্যের মধ্যে তার পছন্দের পন্য সার্ভিস ওয়ারেন্টিসহ তুলে দিতে এবং ই-বর্জ্য বিশাল ক্ষতির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে বিশাল ভূমিকা রাখছে একমাত্র রি-কমার্স প্লাটফর্ম সোয়াপ।
২০২০ সালে যাত্রা শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটি কয়েক মাসে প্রায় ৫০ গুণ বড় হয়েছে । কাজ করছে স্যামসাং, শাওমি, অ্যাপল, বাজাজের মতো লিডিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার মানুষকে এই বিজনেস এর সাথে কানেক্ট করেছে সোয়াপ। বর্তমানে এর রেজিস্টার্ড গ্রাহক এর সংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার। সাড়ে পাঁচ লাখ এরও বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে আমাদের এপ্সটি। একদম প্রথম মাসে মাত্র ১৭ লাখ টাকা আয় হলেও বর্তমানে প্রতি মাসে প্ল্যাটফর্মটির বিক্রি এখন ২৭ কোটি টাকা যা বাড়ছে প্রায় ১০ শতাংশ হারে।
রি-কমার্স প্লাটফর্ম সোয়াপ প্রধান নির্বাহী মো. পারভেজ হোসেন জানিয়েছেন তার স্বপ্নের আদ্যোপান্ত।
সোয়াপ বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র নির্ভরযোগ্য রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এই প্লাফর্মে সোয়াপ একটি কাস্টমার টু বিজনেস (সিটুবি), বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) এবং কাস্টমার টু বিজনেস টু কাস্টমার (সিটুবিটুসি) মার্কেটপ্লেস হিসেবে কাজ করে, যেখানে গ্রাহকরা তাদের ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল কিনতে, বিক্রি করতে বা অদল-বদল করতে পারে। অনেক নিম্ন আয়ের উপার্জনকারীদেরও পণ্য ক্রয়, বিক্রয় এবং বিনিময় করতে প্ল্যাটফর্মটি সক্ষম, যা উদীয়মান ই-কমার্স বাজারে অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করছে প্রতিষ্ঠানটি।প্রতিষ্ঠানটি মোবাইল কিনে পরে টাকা দেয়ার সুবিধা এবং ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ভাড়ায় দেয়া চালু করছে।
সোয়াপ পুরনো বা রিফার্বিশ মোবাইলের পাশাপাশি তাদের দৃষ্টি এখন নতুন পণ্যের দিকেও। সম্প্রতি প্লাটফর্মটি অফিসিয়াল ওয়ারেন্টিসহ আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুকসহ অ্যাপল আনুষাঙ্গিক পণ্য বিক্রির অফিসিয়াল অনুমোদন পেয়েছে। এ উপলক্ষে অ্যাপল পণ্যে বিশেষ অফার ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। এছাড়া প্রতিযোগিতা মূল্যে অ্যাপল পণ্য বিক্রয়ে অ্যাসুউরড বাই ব্যাক, ইজি আপগ্রেড'সহ বিভিন্ন অফার ঘোষণা করেছে প্ল্যাটফর্মটি।
সারাদেশের আগ্রহী গ্রাহকরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে যেনো ঘর বসে সহজে তাদের পুরাতন পণ্য বিক্রি করতে পারেন। সেই সাথে তাদের ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক পণ্যের বিনিময়ে শুধু ন্যায্য দামই নয়, বরং কম দামে নতুন পণ্য কিনতে পরেন সে দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সোয়াপ। এ বিষয়ে গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা ও পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের তাদের ই-বর্জ্য যথাযথভাবে বর্জন করার সুযোগও দিয়ে থাকে রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম।
আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কাস্টমারদের কাছে এই সেবাটি পৌঁছে দেয়ার। প্রথমে ঢাকা থেকে এটি শুরু করেছিলাম। এখন আমরা ২৬টি জেলায় কাজ করছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬৪টি জেলায় সেবাটি পৌঁছে দেয়ার। রাজধানীতে পুরানো পণ্য বিক্রির সুযোগ রয়েছে। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ সুযোগটা নেই।
প্রথমে আমরা পুরনো মোবাইল ফোন দিয়ে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করি। পরে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন কোম্পানির ল্যাপটপ ও গ্যাজেট যুক্ত হয় ক্যাটেগরিতে। গ্যাজেটের মধ্যে স্মার্টওয়াচ, ট্যাবলেট, আইপ্যাড, অ্যাক্সেসরিজ। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বাইক, গাড়ি এবং ফার্নিচার এসব পণ্য নিয়ে কাজ করছি।
পণ্যের এক্সচেঞ্জ সুবিধা সম্পর্কে পারভেজ হোসেন জানান, এ সেবাটা আমরা দুই ভাবে দিয়ে থাকি। একটা হলো কাস্টমার যদি ঘরে বসে তার পুরানো ফোন, বাইক বা ল্যাপটপটি বিক্রি করতে চান, তাহলে ওই কাস্টমারকে বিক্রির জন্য আমদের এখানে ওয়েবসাইটে অনুরোধ করতে হবে। অনলাইনে প্রক্রিয়ার মধ্যে উল্লেখ করতে হবে আপনি কোন পুরানো পণ্যটা বিক্রি করে কোন নতুন পণ্যটা নিতে চান। তাহলে আমাদের টিমের সদস্যরা সাথে সাথে বাসায় গিয়ে ওই পুরোনো পণ্য দেখে নির্দিষ্ট দাম দিয়ে নতুন পণ্যও দিয়ে আসবেন। যেমন একটা স্যামসাংয়ের ফোন নিতে চান। ফোনটার দাম ৩০ হাজার টাকা। এখন আপনার পুরানো ফোনের দাম ১২ হাজার টাকা। আপনি পুরানো ফোন দিয়ে বাকি ১৮ হাজার টাকা দিয়ে নতুন ফোনটা নিতে পারবেন। একই স্টাইলে বাইক বা ল্যাপটপটিও এক্সচেঞ্জ করতে পারবেন।